Thursday, October 20, 2011

সৈদ্যাবুল আর খান্শাজাহানের সম্পর্কের পালাবদল


আবুল আর শাজাহানে গলাগলি করে, ওরে ভাই
বুকে আয়, আয় বুকে, তুই ছাড়া মোর কেহ নাই।

আকাশে পাতালে তুই লাখো কোটি সেতু দে রে ভরে,
আমি আছি শাজাহান, দিল-জান দিয়ে দেবো তোরে।
কিন্তু আমারে তরে ঝরে যেনো বখরার ঢল।
দোস্তো মানুষ তুই, কি বা আর কবো তোরে বল?

মিটিঙে যদিও আমি বিরোধিতা করেছিনু তোরে
চাঁদাবাজী ইস্যুটাতে। কিন্তু রাখিস তুই ধরে,
আবুইল্যা ছাড়া তোর দরদী কোথায় পাবি বল?
চাঁদার বখরা নিয়ে যেনো ভাই করিসনে ছল।

ফাইল বোঝাই করে সেতু আসে সেতু চলে যায়।
হতবাক শাজাহান বখরার দেখা নাহি পায়।
বড় আক্ষেপ নিয়ে আবুইল্যা ফ্যাল ফ্যাল চায়,
বস্তা বস্তা ভরে চাঁদার টাকারা সরে যায়।

তুই শালা বদমাশ, হারামীর রক্তের ছাও।
আমার বখরা মেরে দেখি বাছা কতদুরে যাও।
তুই শালা বদরাজ, চাঁদা খেলি পথে-জলে-ঘাটে
মেরেছিস ভাগা, তোরে ফেলবো ঠিকই আমি বাঁটে।

চোপরাহ বেতমীজ, নকল সৈয়দ কোথাকার।
জবান সামাল কর, কোথাকার খান-খাকছার।
বখরা ভাগার ডিলে, নেমে আসে হতাশার বাণ।
কপাল চাপড়ে কাঁদে সৈদ্যাবুল-খান্শাজাহান।

আবুল আর শাজাহানে গালাগালি করে, ওরে ভাই,
তোর মতো বাটপার এভুবনে দুই পিস নাই।
বঙ্গমাতার কাছে দাখিল করবো ফরিয়াদ,
মন্ত্রীসভার থেকে শীর্ঘই যেনো তোরে দেন বাদ।

Wednesday, October 19, 2011

প্রথম আলো-কালের কন্ঠ গংয়ের বাঙালীত্বের চাদরে ঢেকে দেওয়া এক বিলেতি চুন্নী

শুনেছি একদা শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষুব্ধ হয়ে নাকি বলেছিলেন,

সবাই পায় তেলের খনি, সোনার খনি, আর আমি পাইছি চোরের খনি।

মহিমা খানম নামটা সাথে আমি মোটেও পরিচিত ছিলাম না। সম্ভবত বাংলাদেশে নামটা তেমন পরিচিত একটা নাম নয়। আবার এমনও হতে পারে যে বাংলাদেশে সে একজন পরিচিত মুখ, কিন্তু আমি চিনি না। তবে সম্প্রতি তার নাম এবং কাজের সাথে পরিচিত হলাম। যদিও তার নামের আগে বাঙালী মডেল বিশেষণ জুড়ে দেওয়া হয়েছে কিন্তু তার সাম্প্রতিক পরিচিতিটা এসেছে চোর হিসেবে, মোবাইল ফোন চোর। তা’ও খোদ বিলেতে বসে দাঙ্গার মধ্যে উত্তর লন্ডনের এক কার ফোনের দোকান থেকে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার পাউন্ড দামের মোবাইল ফোনসেট চুরি! পত্রিকায় ব্যাপকভাবে এই সংবাদ এসেছে, সাথে এসেছে তার স্বল্পবসনা, উন্মুক্তপ্রায় বক্ষ-নিতম্ববিশিষ্ঠ যৌনউত্তেজক ছবি।

এখন প্রশ্ন হতে পারে যে মহিমা খানম চুরি করলে তাতে আমার কি? হ্যাঁ, আমার অবশ্যই তাতে এসে যায়। কারণ এখানে তাকে চোর মহিমা খানম হিসেবে পরিচিতি দেওয়া হচ্ছে না, তার পরিচয় দেওয়া হচ্ছে বাঙালী মডেল এবং সঙ্গীতশিল্পী মোবাইল চোর মহিমা খানম হিসেবে। এখানেই আমার অস্বস্তি।

মহিমা খানম বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া একজন বৃটিশ। সে এখনও তার বাংলাদেশী পাসপোর্ট ব্যবহার করে কি না তা জানিনা তবে সে একজন বৃটিশ এটা সত্যি। বসবাস না কি পরিবার, কোন সূত্রে সে বৃটিশ নাগরিকত্ব পেয়েছে তা নিয়ে আমার মাথাব্যাথা নেই। আমার কাছে সে একজন বৃটিশ। কারন হিসেবে উল্লেখ করবো তার বসবাস, শিক্ষা, ক্যারিয়ার, সমাজসেবা, সবই বিলেতে। তার ভাষা হিসেবে উল্লেখিত হয়েছে ইংরেজি। একটা সংবাদের শেষে মন্তব্যের ঘরে একজন পাঠক লিখেছিলো যে মহিমা নাকি বাংলাটাও ঠিকমতো অনর্গল বলতে পারেনা। তার প্রোফাইলে যে ধরনের তথ্য পাওয়া যায় তাতে দেখা যায় যে সে বাঙালী সংস্কৃতির সাথে সম্পর্কবিহীন একজন তরুনী যার দক্ষতার তালিকা শুরু হয়েছে বেলিড্যান্স দিয়ে। এর পর তার নৃত্যকলায় মূল পরঙ্গমতার যে তালিকা দেওয়া হছে তার কোনওটা আমাদের সংস্কৃতির ধারকাছে দিয়েও যায়না।

মহিমা চুরি করেছে এবং শাস্তি পেয়েছে। বিলেতের কোর্টে যথেষ্ঠ সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়া তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে এটা আমি মানতে রাজী না। একজন অপরাধী তার কৃতকর্মের জন্যে শাস্তি পাবে এটাই স্বাভাবিক এবং প্রত্যাশিত। তবে আমার আপত্তি তাকে বাংলাদেশী মডেল হিসেবে পরিচিতি দেওয়াতে। শেখ মুজিবর রহমানের কথিত চোরের খনি থেকে আরেক টুকরো চোরের উত্তোলনে। এবং এই ‘উত্তোলন’টা করেছে কেবলমাত্র বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম। এমনকি বাংলাদেশের একটা সংবাদ মাধ্যমও তাকে স্থায়ী প্রবাসী বাংলাদেশী অথবা বৃটিশ নাগরিক হিসেবে পরিচয় করায়নি। শ্রেফ বাঙালী মডেল, এটাই তার একমাত্র পরিচয়। যেখানে জাত্যাভিমান এবং উন্নাসিকতার ধারক ও বাহক বৃটেনের সংবাদমাধ্যমগুলো তাকে বৃটিশ বলেই মেনে নিয়েছে এবং এমনকি কেউ কেউ তার বাংলাদেশী ব্যাকগ্রাউন্ডের কথাটাও উল্লেখ করেনি, সেখানে আমাদের সংবাদমাধ্যম কোন স্বার্থে এই তরুনীর বাঙালিয়ানাকে ফলাও করে প্রচার করতে গেলো এবং তার বৃটিশ নাগরিকত্বটা আড়াল করতে গেলো? বড়োই জটিল প্রশ্ন! গুগল সার্চ দিয়ে বাংলাদেশী সংবাদমাধ্য এই খবর শতাধিক সূত্রে পাবেন যেখানে দেখবেন সব শেয়ালের এক রা, ‘বাঙালী মডেল’ মহিমা খানম। আমি অনুরোধ করছি নিচের সবগুলো লিংক না খুলতে। এতে আপনার সময় নষ্ট হবে কারন সব লিংকগুলোই একই টেক্সটের কপি এবং পেস্ট। আমেরিকার www.hdlns.com Whats On Xiamen ওয়েবসাইটের একটা লিংক দিয়েছে যাতে তারা পরিষ্কারভাবে লেখা,

UK model Mohima Khanom jailed for looting £9,400 worth of mobile phones
Updated: 27 Aug 2011

A MODEL who looted mobile phones worth £9,400 got 16 months' prison yesterday.


Mohima Khanom, 23, wept during sentencing. She was said to be "terrified" of returning to jail after 13 days on remand.

Khanom admitted raiding a Carphone Warehouse during riots in Woolwich, South London, on August 8.

The aspiring singer, of Charlton, studied performing arts and appears in racy shots on model sites.

She also worked with autistic kids, Inner London Crown Court heard. Judge Roger Chapple said: "Despite your good side, the naked greed is almost breathtaking."

KIDS as young as ten are being recruited into tough inner-city gangs – and go on to commit street robberies by 13, a shock report has revealed. 
SOURCE: thesun.co.uk
 প্রথম আলোর নির্লজ্জ তথ্যবিকৃতি আবারও এখানে দেখতে পাবেন। তারা খবরটা ছেপেছে দ্য সানের সূত্র উল্লেখ করে। এখন দেখেন দ্য সান কি লিখেছে আর প্রথম আলো কি ছেপেছে-

দ্য সানের খবরের স্ক্রিনশট



প্রথম আলোর খবরের স্ক্রিনশট


তথ্যবিকৃতিতে কালের কন্ঠও দেখছি প্রথম আলোর মতোই পারদর্শিতা দেখাতে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তারা খবরটা ছেপেছে দ্য কোর্ট নিউজের সূত্র উল্লেখ করে। এখন দেখেন দ্য কোর্ট নিউজ কি লিখেছে আর কালের কন্ঠ কি ছেপেছে-

দ্য কোর্ট নিউজ ইউকের খবরের স্ক্রিনশট



কালের কন্ঠের খবরের স্ক্রিনশট


 উপরের খবর চারটে পড়েন। দ্য সান এবং দ্য কোর্ট নিউজ ইউকে কোথায় লিখেছে যে মহিমা খানম একজন বাঙালী মডেল কন্যা? আপনি আমি খুঁজে পাইনি কিন্তু প্রথম আলো বা কালের কন্ঠ খুঁজে পেয়েছে। এভাবে যদি চলে থাকে তো এমন দিন আসছে যেদিন সচেতন মানুষ হেগেও প্রথম আলো বা কালের কন্ঠ দিয়ে কুলুপ করবেনা।

মহিমার এই চৌর্যবৃত্তি চুরি হিসেবে খুব বড়ো ধরণের কিছু একটা নয়। এটা বড়ো একটা ঘটনা হিসেবে রূপ নিয়েছে যেহেতু ঘটনাটা ঘটেছে বিলেতে এবং দাঙ্গার মধ্যে। শোনা যায় জহিরুল ইসলাম নাকি সেই সত্তরের দশকে সৌদি আরবে ঠিকাদারী দুর্নীতির কারনে একটা আঙুল হারিয়েছিলো। আর দেশের রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, আমলারা যে হারে চুরি করে, আর্থিক মুল্যের বিবেচনায় মহিমার চুরি নিতান্তই ক্ষুদ্র। কিন্তু এই চুরির সাথে এসেছে দেশের নাম এবং এনেছে আমাদের দেশের সংবাদমাধ্যম। তারা একজন বাঙালীর চৌর্যবৃত্তি বড়ো করে দেখাতে চেয়েছে, জানিনা কি তাদের লাভ এতে। কিন্তু তারা জনসমক্ষে একজন বাঙালী চোর এবং তার কৃতকর্মকে সচিত্র উপস্থাপন করে একজন বৃটিশ চোরের অপকর্মগাথা ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে এটা নিন্দনীয়।